আমার তৈরী ওয়েব সাইট

আল্লার নাম নিয়ে আমি এই প্রথম এই ব্লগে যোগ দিলাম। কিছু কিছু সমস্যার মধ্যে পরতে হচ্ছে। যেমনটা ওয়েব সাইট তৈরী করতে হয় আরকি। আমার জীবনের একটি আশা যে আমি একজন খুব বড় একজন ওয়েব সাইট তৈরী কারক হব

বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০১৬

গল্প


               ...................................... একটি বেয়াদব ভুতের গল্প..........................................
১.
বেচারা রফিক মিয়া চৈত্রের অস্থির গরম থেকে বাঁচতে সন্ধ্যার পর বাড়ির দরজায় নারিকেল গাছের সাথে গা ঠেকিয়ে একটু বাতাস খেতে আসছেন। বাতাস খেতে ভালোও লাগছিলো। কিন্তু আচমকা কোন বদমাশ এসে দিলো পাছার উপর কষে এক থাপ্পড়! আজব ব্যাপার, কার হঠাৎ শখ জাগলো ৫৫ বছর বয়সী পাছায় থাপ্পড় মারার? কী বিচ্ছিরি বিষয়। এটা কোন কথায়ই না। থাপ্পড় মারার পর আবার বলে – কিরে সোহাগ, বাতাস খাইতে খুব ভালো লাগে? বাতাসের সাথে একটা থাপ্পড় হলে খারাপ হয় না, তাই না।
এটা শুনে রফিক মিয়া বললেন, “আমি সোহাগ না, রফিক।“ খাইছে! ব্যাপারটাতো পুরা কাবজাব হয়ে গেলো। যে থাপ্পড় মারছে, সে দিলো দৌড়। দৌড় দিবেই না কেন, বাপের পাছায় থাপ্পড় মারাতো যেনতেন ব্যাপার নয়। ছেলে বাপের পাছায় থাপ্পড় মেরে পরে বুঝতে পেরে দৌড় দিলো, আর বাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে – এ কী হলো! অন্ধকারে মুখ চেনা না গেলেও কণ্ঠ শুনে বুঝলেন এটা তারই ছেলে নাসির।
রফিক মিয়া খেয়াল করে দেখলেন থাপ্পড় মোটেও হালকা ছিলো না। ৫৫ বছর বয়সী পাছাটা খুব ব্যাথা করছে। অবশ্য ব্যাথার মাঝেও কিছুটা আনন্দ হচ্ছে। ছেলেটা খুব শক্তিমান হয়েছে। এটা রফিক মিয়ার একমাত্র ছেলে। নাম নাসির। নাসিরের জন্মের পর সবাই বলেছিলো এত ছোট সাইজের বাচ্চা বাঁচবে না। বাঁচলেও অনেক রোগা হবে, খাটো হবে। এখন নাসিরের বয়স ২০ বছর। যেমন লম্বা, তেমন স্বাস্থ্যবান। নিন্দুকের মুখে চুনকালি মেখে ছেলে এখন বাপের পাছায় থাপড়াইতে জানে। তাও যেনতেন থাপ্পড় না। থাবড়ে বাপের পাছা লাল করে দিয়েছে।
বাপ কী ভাবছে ছেলের জানার সুযোগ নেই। ছেলে আছে ভয়ে, আতংকে আর লজ্জায়। কত বড় কুলাঙ্গার সন্তান হলে বাপের পাছায় থাপ্পড় মারতে পারে! ছি ছি!! তাও ব্যাপারটা এমন না যে, বন্ধু বান্ধবের পাছায় থাপ্পড় মারার অভ্যাস আছে তার। দুষ্টুমির ছলে কিল ঘুষি লাত্থি মারে হয়তো, কিন্তু পাছা জিনিসটা অশ্লীলতো, তাই অন্যের পাছা ছুঁইতে নাসিরের তীব্র আপত্তি আছে। এখন সমস্যা সেটা না। সমস্যা হচ্ছে বাপকে মুখ দেখাবে কী করে? বাপের পাছায় থাপ্পড় মারা পরবর্তী কাজটাইবা কী? বাপের পা ধরে ক্ষমা চাইবে? বলবে, “আব্বা আমি ভুল করে থাপ্পড় মেরেছি। ভেবেছি চাচাতো ভাই সোহাগ দাঁড়িয়ে আছে। আব্বা আমারে মাফ করে দেন।“ কিন্তু এটা বলার জন্য বাপের সামনে কিভাবে যাবে!
মোটকথা হচ্ছে নাসির বিষয়টা মেনে নিতে পারছে না। জীবনে কখনো বাপের পাছার দিকেই তাকায়নি সে। আরে বাবা, পাছাটাতো বাপের, এটার দিকে কিভাবে তাকায়! আপনারা ভুল বুঝবেন না, নাসির কখনো বিপরীত লিঙ্গের মানুষের পাছার দিকেও লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকায় না। নাসিরের সমস্ত আগ্রহ গরুর পাছার দিকে। গরুর পাছার মাংস খেতে খুব পছন্দ করে। নাসিরের বাপ আবার গরুর সিনার হাঁড় মাংস পছন্দ করে। কিন্তু মাংস কেনার সময় ছেলের কথা মাথায় রেখে পাছার মাংসও কিনে।
এখন এই সমস্যার সমাধান কিভাবে হবে? নাসির কখনোই বাপের পাছায় থাপ্পড় মারা ছেলে হতে চায়নি। বাপের মুখ উজ্জ্বল করা ছেলে হতে চেয়েছে। কিন্তু বাপের মুখ উজ্জ্বল করা বাদ দিয়ে পাছা লাল করে দিয়েছে। আপনারা হয়তো হাসছেন। কিন্তু নাসিরের ব্যাপারটা একবার বুঝার চেষ্টা করুন। এখনো নিজের পায়ে দাঁড়ায়নি সে। বাপের টাকায় খেয়ে পরে বেঁচে আছে। ভুল করে বাপের পিঠে চাপড় দিলেও রক্ষে হয়, কিন্তু পাছা? এটাতো ভাই বড় অশ্লীল হয়ে গেলো! এখন বাপরে হয়তো বুঝানো গেলো চাচাতো ভাই মনে করে বাপের পাছায় থাপ্পড় মরেছে, কিন্তু বাপের মনতো উল্টাপাল্টাও বুঝতে পারে। বাপতো ভাবতে পারে তার ছেলের ইয়ের দোষ আছে। যৌবনের ক্ষুধায় ছেলেদেরকে পছন্দ করে সে। উফ! যদি এমন কিছু ভাবে, তাহলে বেদনায় বাপের বুক ভেঙ্গে যাবে। সব বাবাই চায় ধুমধাম করে একটি সুন্দরী মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে দিবে। কিন্তু ছেলের যদি অন্য দোষ থাকে, তাহলে আরেকটা ছেলেকে কিভাবে বৌ করে ঘরে আনবে? সমাজের মানুষরাইবা কী বলবে! সমাজ এখানে বিশাল ব্যাপার।
আপনারা মোটেও আন্দাজ করতে পারছেন না এই মুহূর্তে নাসিরের অবস্থা কত খারাপ। নাসির ভাবছে আত্মহত্যা করবে। অথবা পালিয়ে যাবে। কোনভাবেই এই মুখ নিয়ে বাপের সামনে দাঁড়াতে পারবে না। এই মুহূর্তে নাসির অসহায়, বিপদে আছে। কিন্তু এতকিছুর পরও ছেলেটি বাস্তববাদী। আত্মহত্যা কিংবা পালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবলেও আসলে সে অন্য কোন পথ খুঁজছে। পথের খোঁজও পেয়েছে। হয় পাগল সাজবে, নয়তো ভুতের আছরের নাটক করবে। যেন তার বাবা সমস্ত পুত্রস্নেহ দিয়ে ছেলেকে সুস্থ করে উঠেপড়ে লাগেন।
এক্ষেত্রে পাগলের বেশ ধরা রিস্কি। পাগল হলে হাসপাতালে নিয়ে যাবে। ডাক্তাররা চালাকি ধরে ফেলবে। কিন্তু ভুতের বিষয়টা সামনে আনলে ঘটনা আর হাসপাতালে যাবে না, যাবে ঠাকুর অথবা মসজিদের হুজুরের কাছে। এটা অনেক নিরাপদ। অন্ততপক্ষে নাসির সেটাই মনে করে।
নাসির বুদ্ধি করে ঘটনাটি পুরো গ্রামে ছড়িয়ে দিলো। বাজারে কয়েকশ মানুষের সামনে ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বারের পাছায় দিলো কষে এক থাপ্পড়! সবাইতো হতবাক। মেম্বারও ক্ষ্যাপা।
– তুই আমার পাছায় থাপ্পড় মারলি ক্যান?
– ওমা, পাছাতো থাপড়ানোরই জিনিস। তাই থাপড়াইছি। পেছনে ঘোরেন, আরেকটা থাপ্পড় মারি।
মেম্বারসাব মান সম্মান নিয়ে দৌড়ে পালানেন। বিচার গেলো নাসিরের বাপের কাছে। বাপ ভাবছে ঘটনা কী, ছেলে এভাবে পাছা থাপড়ানো শুরু করছে ক্যান!
বাপের সাথে চোখাচোখি হয় না। ছেলেকে দেখলে বাপ দূরে সরে যায়, বাপকে দেখলে ছেলে। পাছা কেলেংকারি বাপ ছেলের মাঝে একটি সুনির্দিষ্ট দূরত্ব সৃষ্টি করে দিয়েছে। দুপুর বেলা বাড়িতে গোসল করতে অন্য সবার সাথে ঘাটে গেছে নাসির। চাচাতো ভাই সোহাগের বাবা গোসল সেরে ঘাটে উঠে দাঁড়ালেন। নাসির খুব মনযোগ দিয়ে চাচার পাছা দেখছে। চাচা বিষয়টা খেয়াল করলেন। বিব্রত হলেন।
– চাচা, আপনার পাছাটা খুব সুন্দর। অনেক মাংস। এদিকে আসেন, একটু থাপড়ে দিই।
এই কথা শুনে কিছু বুঝে উঠার আগেই লুঙ্গির উপর দিয়ে ভেজা পাছাটায় কষে এক থাপ্পড় বসিয়ে দিলো নাসির। নাসিরের চাচীও পুকুর ঘাটে। স্বামীর হৃষ্টপুষ্ট পাছাটা তার খুব প্রিয় হলেও কখনো থাপ্পড় দেয়ার চিন্তা করেননি। উল্টো এই লোভ মেটান নাতির পাছার উপর। ২ বছর বয়সী নাতিটারে উপুর করে আচ্ছামতো পাছায় থাপড়ান। কিন্তু এখন নাসির এটা কী করলো! ছি ছি! ছেলেটারে খুব আদর করতেন তিনি। নিজের ছেলের মত জানতেন। অথচ সেই ছেলেই কিনা চাচার পাছায় থাপ্পড় দিলো। তাও আবার ভেজা পাছা। ভেজা গায়ে থাপ্পড় যে কী জোরে লাগে! স্বামীর জন্য মনে মনে বেদনা অনুভব করলেন তিনি।
যথারীতি নাসিরের আব্বার কাছে বিচার গেলো। পড়লেন দুশ্চিন্তায়। তিনি তার বাকি দুই ভাইকে নিয়ে বসলেন আলোচনায়। নাসিরতো এরকম ছেলে না। হঠাৎ তার কী হলো! আলোচনার এক পর্যায়ে নাসিরকেও ডাকা হলো। নাসিরতো লজ্জায় শ্যাষ। অনেক কষ্ট করে গায়ের কাঁপুনি নিয়ন্ত্রণে এনে বাপ চাচাদের সামনে দাঁড়ায়। সকল জড়তা কাটিয়ে নাসিরকে জিজ্ঞাসা করা হলো সে কেন সবার পাছায় থাপ্পড় মারছে?
এটা শুনে নাসিরতো আকাশ থেকে পড়লো। লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। বিস্ময়ে চোখ দুইটা ঠেলে বেরিয়ে যাচ্ছে।
– আব্বা, আব্বা, আপনি এসব কী বলতেছেন! ছি ছি! আপনাকে এসব কে বলেছে? আব্বা আপনিই বলেন আমি কেন সবার পাছায় থাপ্পড় মারবো?
– কিন্তু ঘটনাতো সত্য।
– আব্বা, বিশ্বাস করেন, আমি কারো পাছায় থাপ্পড় মারি নাই। পাছা একটা নোংরা ও অশ্লীল জিনিস। আব্বা, আমি কিভাবে যে বুঝাই, আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছে। চাচার পাছায় থাপ্পড় মেরেছি! কী ভয়ংকর অশ্লীল অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে। আব্বা, আমার মরন ছাড়া আর উপায় নাই।
– তুই আমার পাছায়ও থাপ্পড় মেরেছিস, হারামজাদা।
এটা শুনে নাসির আর নাই। মাথা ঘুরে পড়ে গেছে। বাপ চাচারা সবাই এসে নাসিরকে জড়িয়ে ধরেছে। চোখে মুখে জলের ছিটা দিচ্ছে। নাসিরতো ঘেমেটেমে একাকার। জলের ছিটা খেয়ে নিজের হারানো জ্ঞান ফিরিয়ে আনলো সে। সেজো চাচা আর ছোট চাচার দিকে তাকিয়ে রইলো। তাদেরকে দূরে উল্টো পাশে হাতের ইশারা দিয়ে বললো, “চাচা দেখতো ওইটা কী?” এটা শোনার পর চাচারা পাশ ঘুরলেই নাসির দুই হাত দিয়ে দুই চাচার পাছায় গায়ের সব শক্তি দিয়ে থাপ্পড় মারলো। তারাও গায়ের সব শক্তি দিয়ে চিৎকার করলো। চিৎকার শুনে নাসির আবার অজ্ঞান হয়ে যায়।
এসব দেখে চাচারা বললো নিশ্চয় নাসিরকে ভূতে ধরেছে। নইলে সবার প্রিয় বুদ্ধিমান ছেলেটা এরকম কেন করবে? নাসিরের বাবা রফিক মিয়া ভাইদের কথায় সায় দিলো। নাসিরের ছোট চাচা বললো, তবে ভূতটা ভালো। শুধু পুরুষদের পাছায় থাপ্পড় মারতেছে। নিশ্চয় ভুতটা কোন সম্ভ্রান্ত পরিবারের। ভদ্র এবং সভ্য।
ঘটনার এই পর্যায়ে এসে যেহেতু ভূতের বিষয়টা ধরা পড়লো, সেহেতু এখন ভূত তাড়ানোর জন্য এক্সপার্ট দরকার। এই গ্রামে দুইজন মানুষ ভূত তাড়ায়। একজন হলো ব্রাহ্মণ ভাসান ঠাকুর, আরেকজন মসজিদের ইমাম। ভাসান ঠাকুরদের ভূত তাড়ানোর ইতিহাস অনেকদিনের। তার বাবা অতীশ ঠাকুরও ভূত তাড়াতেন। তারা ভূতকে ঝাড়ুপেটা করে তাড়িয়ে দেয়। লতাপাতার ধোঁয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। গু মাখানো জুতা শুঁকিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
ঠাকুর আর হুজুরের প্রশ্নে নাসিরের বাবা ঠাকুরের পক্ষে। কিন্তু নাসিরতো সব শুনেছে। লতাপাতার ধোঁয়া না হয় মানা যায়, কিন্তু গু মাখানো জুতা সে কোনভাবেই শুঁকতে পারবে না। দেরি না করে অজ্ঞান নাসির সটান উঠে বসে হুংকার ছাড়লো, “কোন হিন্দু খোনকার ডাকলে আমি যাদের পাছায় থাপ্পড় দিয়েছি, তাদের পাছায় কাঁটাওয়ালা গাছের জন্ম হবে। এইসব কাঁটায় থাকবে ভয়ানক বিষ। পাছায় বিষকাঁটার গাছ নিয়ে এই মানুষগুলো বসতে পারবে না, চিৎ হয়ে শুইতে পারবে না, দেয়ালে ঠেক ধরতে পারবে না। কিন্তু যদি মসজিদের ইমাম আনে, তাহলে সবার পাছাই রবে অক্ষত এবং নিরাপদ। পাছায় কাঁটাওয়ালা গাছতো দূরে থাক, একটা ঘাসও গজাবে না।
নাসিরের মেজো চাচা খুব খুশি। কারণ সে চেয়েছে মসজিদের ইমামকে দিয়ে ভূত তাড়াতে। তার মতে ওইসব ঠাকুর মাকুর ভুয়া জিনিস। সব ধান্ধাবাজের দল। কিন্তু মসজিদের ইমাম, তার মাঝে কোন ধান্ধা নেই। তিনি ফেরেশতার চাইতেও ফ্রেশ। নিজ দায়িত্বে বেরিয়ে গেলেন ফ্রেশ ইমামকে নিয়ে আসতে।
নাসিরের অবস্থা ভালো না। তারচেও খারাপ হচ্ছে নাসিরের মা’র অবস্থা। একমাত্র ছেলেকে ভূতে ধরেছে। না জানি কোন ক্ষতি করে দেয়। ভূতে কোন বিশ্বাস নাই। ভূত খুব খারাপ জিনিস। নাসিরের মা ভূতকে দুই চোখের কোনায়ও দেখতে পারেন না। ঘৃণাভরে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেন।
এখন চৈত্রের গরমে সবাই ঘামছে। কিন্তু নাসির একটু বেশিই ঘামছে। তার চোখ দুইটা কট্টর লাল। যেন ঠেলে বেরিয়ে আসবে। কী যে ভয়ংকর এক চেহারা হয়েছে নাসিরের! ছেলের এই অবস্থা দেখে নাসিরের মা হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। ওইদিকে নাসিরের ছোট চাচা ছিলেন সুযোগের অপেক্ষায়। ভাবীর কান্না দেখে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে দেবরও কান্না শুরু করে দিলো। দেবরটা ভালোই, কিন্তু ভাবীর প্রতি একটু দুর্বল আরকি!
নাসিরের এসব নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। সে ভাবছে এই ফালতু ঝামেলাটা যত দ্রুত মিটে যায়, ততই মঙ্গল। অভিনয় খুব কষ্টের বিষয়। টানা এতক্ষণ অভিনয় করে সে হাঁপিয়ে উঠছে। কিন্তু তাকে যে আরো অনেকটা সময় অভিনয় করে যেতে হবে। কারণ ইমাম সাহেব নেই। কোন আত্মীয়ের বাড়িতে গেছেন, পরশু আসবেন।
নাসিরের বাপ চাচারো পড়লো বিপদে। এখন নাসিরকে কী করবে? সেতো যাকে পাবে তার পাছায় থাপ্পড় মারবে। মনে মনে ভূতকে নোংরা সব গালি দিচ্ছেন। নাসির বুঝতে পারছে তার বাবা ভূতকে গালি দিচ্ছে। সে চিৎকার করে বললো – খবরদার, গালি দিবি না। আর দিলেও এত নোংরা গালি না।
২.
রফিক মিয়া সিদ্ধান্ত নিলেন ছেলেকে ঘরে দরজা বন্ধ করে রাখবেন। কিন্তু নাসিরের চাচা বললো এটা নিরাপদ না। ফাঁক ফোঁকর দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবে। তারচে ভালো পায়ে লোহার শিকল দিয়ে আটকে রাখা হোক। ভূত লোহা ভেঙ্গে যেতে পারবে না। এটা শুনে নাসিরের মা’তো পারলে দেবরের গলা ছিঁড়ে ফেলেন। তিনি বললেন, কোনভাবেই তার ছেলেকে পাগলের মত পায়ে শিকল পরিয়ে রাখা যাবে না। হুজুর আসা পর্যন্ত সে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করবে।
বিকাল বেলা নাসির গেলো বাজারে। বাজারে যাওয়ার সাথে সাথে মানুষ সব ভয়ে পালাচ্ছে। কেউই বেইজ্জতি হইতে চায় না। শুধু একজন মানুষ পালাচ্ছে না। যিনি ছোট বেলায় নাসিরকে পড়িয়েছেন। তার বিশ্বাস নাসিরের ভূত অন্তত তার শিক্ষককে অপমান করবে না। স্যার মানুষ, সাহস করে নাসিরের কাছে গেলেন। মাথায় হাত বুলালেন। জিজ্ঞাসা করলেন চা খাবে কিনা। কিন্তু নাসির কিছু কয় না। স্যার আবারো জিজ্ঞাসা করে, জুস খাবে কিনা, মিষ্টি খাবে কিনা। নাসির তাকিয়ে আছে স্যারের পাছার দিকে। স্যার সাহস করে বললেন –লুঙ্গিটা নতুন কিনেছি, সুন্দর না?
– সুন্দর। কিন্তু লুঙ্গির নিচে কী আছে স্যার?
– শর্ট প্যান্ট পরেছি। কারণ আমি শক্ত করে লুঙ্গি পরতে পারি না। যখন তখন খুলে যেতে পারে, এই ভয়ে।
– শর্ট প্যান্টের নিচে কী আছে স্যার?
এটা শুনে স্যার সত্যি সত্যি ভয় পেলেন। তিনি বিদায় নিয়ে চলে যেতে চাইলেন। পাশ ঘুরে পা ফেলতেই নাসির দিলো থাপ্পড়। অবশ্য হালকাভাবেই দিয়েছে। শত হলেও স্যার মানুষ। স্যারকে থাপ্পড় দিতে নাসিরের মোটেও ভালো লাগেনি। কিন্তু কোনভাবেই প্ল্যানে ফাঁক রাখা যাবে না। পিতা পুত্রের স্বাভাবিক সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার কাছে স্যারের পাছা মূল্যহীন। একটাইতো থাপ্পড়, পরে মাফ চেয়ে নিলে হবে।
যাইহোক, স্যার অপমানিত হয়ে চলে গেলেন। ওইদিকে নাসিরের চাচা থেমে নেই। তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে চলে গিয়েছেন হুজুরের আত্মীয়ের বাড়িতে। হুজুরকে নিয়েই ফিরলেন। তারপর নাসিরের বাবা ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে গেলেন। উঠানে বসলেন হুজুরসহ। হুজুর আর নাসির মুখোমুখি। নাসিরের দুই পাশে তার দুই চাচা। দূরে মুখে আঁচল কামড়ে দাঁড়িয়ে আছে নাসিরের মা। আশপাশের বাড়ির মানুষরা ভিঁড় জমিয়েছে। নাসিরের ভূত তাড়ানো দেখবে।
হুজুরতো সেইরকম ভাব নিয়ে বললেন – অনেক জরুরী কাজ ফেলে রেখেছি। কই, দেখি বলতো তোমার নাম কী?
– মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন কুয়াবাসী
– তুমি এখানে কেন এসেছো?
– এটা আমার জন্মস্থান। আমার পূর্বপুরুষরাও এই গ্রামের বাসিন্দা।
– নাসিরের উপর কেন আছর করেছো, সেতো খুব ভালো ছেলে।
– নাসির কুয়ার জলে প্রস্রাব করেছে তাই। বেয়াদব ছেলে প্রস্রাব করেছেতো করেছে, তাও আবার দাঁড়িয়ে। ওর বাপও বেয়াদব। ছেলেকে বসে প্রস্রাব করা শেখায়নি।
– তো, এখন তোমার প্ল্যান কী?
– ভালোইতো আছি, আবার কিসের প্ল্যান?
– না, তোমাকেতো ছেড়ে যেতে হবে, তাই না? এর আগেও তিনজন ভূত এইভাবে চলে গেছে। কোন জোর জবরদস্তি করা লাগেনি।
– না, আমি যাবো না।
– বুঝছি। আচ্ছা বলো, কত টাকা দিলে যাবে?
এটা শুনে নাসির মনে মনে বলে, শালারপুত দেখি আমার বাবার টাকার দিকে নজর দিয়েছে। কখনো শুনিনাই ভূত কারো কাছ থেকে টাকা নেয়। একটু ভেবে চিন্তে নাসির (ভূত) সিদ্ধান্ত জানালো।
– এক লাখ এক টাকা।
– এত টাকা হবে না। সর্বোচ্চ দশ হাজার এক টাকা দেয়া যাবে।
– দুই লাখ দুই টাকা।
– আচ্ছা বাদ দাও, বিশ হাজার এক টাকা দিবো।
– তিন লাখ তিন টাকা।
– এতো মহা মুশকিল! ঠিক আছে, এক লাখ এক টাকাই দিবো।
– চার লাখ চার টাকা।
হুজুর ভাবলেন ভালোই হলো, লাভতো তারই হবে। এই টাকাতো আর ভুতের কাছে যাবে না, হুজুরের কাছেই যাবে। নাসিরও ভাবছে ঘরে বাগান বিক্রি করা ক্যাশ টাকা আছে। চার লাখ টাকা তার বাবার জন্য এখন কোন ব্যাপারই না। যাইহোক, হুজুর রাজি হয়ে গেলেন। নাসিরের বাবাও চার লাখ চার টাকায় রাজি। ছেলের জন্য তিনি আরো কিছু করতে প্রস্তুত।
– আর কী চাস বল? কোরমা, পোলাও, খাসি, মোরগ?
এই প্রশ্ন শুনে নাসির ভাবলো হুজুর বড় সেয়ানা মাল। এই উসিলায় কোরমা পোলাও খাইতে চাইছে। কিন্তু নাসির যদি খেতে না চায়, তাহলে জনমনে সন্দেহ জাগতে পারে। নাসির সম্মতি দিলো।
– আর কিছু চাওয়ার আছে?
– আছে।
– কী, তাড়াতাড়ি বলো।
– আপনার পাছায় একটা থাপ্পড় মারবো। এটাই হবে আমার জীবনের শেষ থাপ্পড়।
হুজুরতো ভীষণ রাগ করলেন। এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। তিনি একজন মসজিদের ইমাম। সারা গ্রামের মুসলমানরা তার পেছনে নামাজ পড়ে। এখন যদি নাসিরকে আছর করা ভূত হুজুরের পাছায় থাপ্পড় মারে, তাহলে নামাজে দাঁড়িয়ে সবাই হুজুরের পাছার দিকে তাকিয়ে থাকবে। কী বাজে অবস্থাটাই না হবে। হুজুর মোটেও রাজি হননি। তিনি বললেন থাকুক ভূত, আমি পাছা বাঁচাই। কিন্তু হুজুর বললেইতো আর হবে না। নাসিরের বাপ চাচা ও বাড়ির লোকজন হুজুরকে ধরলেন। বুঝালেন। এবং বললেন থাপ্পড় মারার সময় কারো নজর এখানে থাকবে না। সবাই অন্য দিকে তাকিয়ে থাকবে।
– ঠিক আছে, থাপ্পড় মারতে পারবে। কিন্তু এখানে কেউ থাকবে না। শুধু আমি আর তুমি থাকবো।
– তিন থাপ্পড় মারবো।
– আহা, ব্যাপারটা বুঝার চেষ্টা করো। আমি চাইলেই কিন্তু তোমারে বোতলে ভরে ফেলতে পারি। অযথা ঝামেলা করছো কেন?
– ছয় থাপ্পড়।
হুজুর আড়ালে গিয়ে নাসিরের বাবার সাথে কথা বললেন এবং বুঝালেন এটা সম্ভব না। অনেক অনুরোধের পর নাসিরের বাবা খোলাখুলি বললেন, তিনি যদি ভূতের হাতে পাছায় থাপ্পড় থেকে রাজি হন, তাহলে তাকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হবে। হুজুর তবুও আমতা আমতা করছেন। এরপর নাসিরের বাবা বললেন ৫০ হাজার দেয়া হবে। হুজুর মেনে নিয়ে ভূতের কাছে গেলেন।
– ঠিক আছে থাপ্পড় দাও।
– থাপ্পড়তো এখন দিবো বলিনি। কোরমা পোলাও খাওয়ার পর দিবো।
– আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু কোন ঝামেলা যেন না করো, চুক্তি অনুযায়ী সব করতে হবে। নইলে কিন্তু বোতলে ভরে ফেলবো।
– সেই বোতল দুনিয়াতে এখনো বানানো হয় নাই। নয় থাপ্পড়।
৩.
টাকা প্যাকেট হলো, পোলাও কোরমা রান্না হলো। খাবারগুলো টেবিলে সাজানো। হুজুর বললেন, এই খাবার সবাই খেতে পারবে না। শুধু হুজুর আর ভূত খাবে। এটা শুনে নাসির মনে মনে হাসে। খাউয়া মার্কা হুজুরের পোলাও কোরমার কী শখ! নাসির গর্জে উঠে বললো, “এই খাবার শুধু মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন কুয়াবাসী খাবে। আর কেউ নয়।“ হুজুরের মুখতো শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। যাইহোক, তিনি কোন দ্বিমত করেননি। ভূতের নামে নাসির বসে বসে খাচ্ছে। সবাই চারপাশে ভিঁড় করে আছে। ভূতের খাওয়া দেখছে। আর হুজুর সবাইকে এই গ্রামের ভূতের বিষয়টা বুঝিয়ে বলছে।
– এই গ্রামে ভূত মোট ২১ টা। এর আগে তিনটাকে তাড়ানো হয়েছে। এইটা সহ চারটা হবে। বাকি থাকবে আরো ১৭ টা। এখন এলাকাবাসীকে সাবধান থাকতে হবে। ডোবা, কুয়া, বেত বাগান আর বাঁশ বাগান এড়িয়ে চলতে হবে।
এটা শুনে নাসির ভাবলো হুজুরের কী লোভ! আরো ১৭ বার ভূত তাড়াবেন আর পোলাও কোরমা খাবেন! মনে মনে বলছে, তোর কোরমা পোলাওতে ছাই ঢালছি, দাঁড়া।
– ভূতের সংখ্যা সঠিক নয়। গত বিশ বছর ধরে এই গ্রামে শুধু আমিই ছিলাম। আর কোন ভূত নেই। আমিও থাকতাম না, অভিশাপ দিয়ে ফেলে চলে গেছে। গত বিশ বছর ধরে আমি নাসিরদের ওই কুয়াতে বন্দী ছিলাম। নাসির যখন দাঁড়িয়ে কুয়ার মাঝে প্রস্রাব করছিলো, আমি তার প্রস্ত্রাবের লাইন ধরে উঠে আসি। আমি চলে যাওয়ার পর এই গ্রামে আর কখনো ভূত আসবে না।
হুজুরের মুখে কোন কথা নাই। কিন্তু চারপাশের মানুষের মুখে অনেক কথা। সবাই খুশি। নিজেদের গ্রামকে বাংলাদেশের একমাত্র ভূতমুক্ত গ্রাম ঘোষনার প্রস্তাবও এসেছে। সবার মনে ভূতের ভয়হীন বসবাসের আনন্দ, কিন্তু হুজুরের মুখ কালো। চোখের সামনে টেবিলে এত মজার সব খাবার, ছুঁয়েও দেখতে পারলেন না। এখন আবার আজীবনের জন্য ভূত তাড়ানোর ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
অবশেষে নাসিরের খাওয়া শেষ। ততক্ষণে এশার ওয়াক্ত হয়ে গেছে। আজান দিয়ে নাসিরদের উঠোনেই সবাই নামাজ পড়ে নিলো। নামাজ শেষে ভূত তাড়ানোর পালা। ভূতকে জিজ্ঞাসা করা হলো সে কিভাবে যাবে। ভূত বললো, টাকা বুঝে পাওয়ার পর নাসিরদের বাড়ি থেকে উত্তর দিকে খালের উপর যে কালভার্টটা আছে, তার পাশে একটা বাঁশঝাড় আছে, সেই বাঁশঝাড়ের সামনে গিয়ে ভুত চলে যাবে। তার সাথে আর কেউ থাকতে পারবে না, শুধু হুজুর থাকবে। কারণ ভূত চলে যাওয়ার পর নাসির জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাবে। হুজুর নাসিরকে ধরবে। ভূত আবারো মনে করিয়ে দিলো, তার সাথে শুধু হুজুর যাবে। অন্য কেউ যাওয়ার চেষ্টা করলে হুজুরের ঘাড় মটকে দিবে।
উপস্থিত মানুষের মধ্য থেকে একজন জানতে চাইলো হুজুরের পাছায় থাপ্পড় মারবে কখন? ভূত বললো গায়েব হওয়ার একটু আগে। তো, তারপর ভূতের (নাসিরের) হাতে ৪ লাখ ৪ টাকা তুলে দেয়া হলো। সবাই উঠোনে রয়ে গেলো, শুধু নাসির আর হুজুর কালভার্টের দিকে রওনা দিলেন। এদিকে হুজুরের আর কোন আশা রইলো না। খাবারও পেলেন না, টাকাও না। কপালে শুধু থাপ্পড়টাই রইলো।
বাড়ির দরজা পেরিয়ে রাস্তায়। পাশাপাশি হাঁটছে দু’জন। অন্ধকার। কারো মুখে কোন কথা নাই। নিরবতা ভাঙলো নাসির।
– হুজুর, এভাবে আর কত?
হুজুর কিছু কয় না। চুপ মেরে আছে।
– এই গ্রামে এখনো ১৭টা ভূত আছে, তাই না? আচ্ছা বলেনতো, মানুষের সাথে এসব প্রতারণা করলে গুনাহ হয় না?
– দেখো, আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর সেজো মেয়েটার বিয়ে। জামাই পক্ষকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দিতে হবে। তাই আমি ভেবেছি তোমার যাই হোক না কেন, আমি যেন টাকাটা পাই। এই জন্য নতুন তৃতীয় স্ত্রীর সাথে রাত কাটানোর লোভ সামলে তোমার ভূত তাড়াতে চলে এসেছি। এখন তুমিতো সব মাটি করে দিলা।
– আমিতো জানতাম আপনার এক স্ত্রী। এখন শুনি তিন স্ত্রী। গোপন রাখলেন কেন?
– এখনকার মুসলমানরা বহুবিবাহ ভালো চোখে দেখে না। যদিও ৪ বিয়ে পর্যন্ত করার অধিকার আমার আছে। তাছাড়া এটা খারাপ কী, আমিতো আর দাসী রাখছি না। বিয়ে করে নিচ্ছি।
– ভালোই। এখন কালভার্টতো এসে পড়লো। পাছায় থাপ্পড় খাওয়ার জন্য রেডিতো?
– দেখো, আসল কাহিনী আমিও জানি, তুমিও জানো। তাহলে হুদাই পাছায় থাপ্পড় মারবে কেন?! বাদ দাও না এসব।
– আপনার পাছাটা ভারী সুন্দর, হৃষ্টপুষ্ট। কিন্তু হুজুর, আমি বুঝি না বেশিরভাগ হুজুর এত স্বাস্থ্যবান হয় কিভাবে? আপনাদেরতো এত বেশি আয়ও নেই, খেতেও পারেন না ভালো। এটা বুঝি আল্লাহর রহমত?
– বাদ দাও না। আমারে টাকাগুলো দিয়ে তুমি অজ্ঞান হয়ে যাও। টাকাগুলো বাশঝাড়ে লুকিয়ে রেখে তোমারে কোলে করে ঘরে দিয়ে আসবো। পরে এসে টাকার প্যাকেট নিয়ে যাবো।
– কিন্তু এত হৃষ্টপুষ্ট পাছায় কয়টা থাপ্পড় মারতে না পারলে, পুরা মজাটাই নষ্ট হয়ে যাবে। প্লীজ কালভার্টের উপর উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন। আমি থাপ্পড়গুলো দিয়ে নিই। বাবাতো বলছেই আপনাকে ৫০ হাজার টাকা দিবে। সমস্যা কী?
একরকম জোর করে হুজুরকে কালভার্টের উপর শুইয়ে পাছায় কষে নয়টা থাপ্পড় মারলো নাসির। আর মৃদু স্বরে বলছে, “ভূত তাড়াচ্ছি” “ভূত তাড়াচ্ছি।“ তারপর বললো ৪ লাখ ৪ টাকা তারই থাকবে। আর হুজুর পাবে তার বাবার কাছ থেকে থাপ্পড় বাবদ ৫০ হাজার টাকা।
৪.
নাসিরকে কাঁধে তুলে নিলেন হুজুর। বাড়ির দিকে রওনা দিলেন। হুজুরের কাঁধে শুয়ে নাসির মুখ চেপে ধরে হাসছে। হাসির ধাক্কায় হুজুরের পা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। পায়ের কদমে ভুল হচ্ছে। ভারসাম্য রাখা মুশকিল।
ওইদিকে মুখ চেপে ধরে হাসির আড়ালে নাসির ভাবছে সকালে ঘুম থেকে উঠে বাবার সাথে প্রথম কথাটা কী বলবে, আর আচরণইবা কেমন করবে। এবং মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো জীবনে কখনো কারো পাছায় থাপ্পড় মারবে না।
[গল্পটি কোন সত্য ঘটনা অবলম্বনে নয়। আবার রূপকও নয়। এটা একটি গল্প। এমনিএমনি গল্প।]

আমার ব্যক্তিগত ই-মেইল ঠিকানা দেওয়া হল।

shelima1rana@gmail.com
shelimahmed1@yahoo.com
এই ই-মেইল শুধু মাত্র আপনার ব্যক্তিগত ভাবে কিছু জানাবার জন্য দেওয়ার হচ্ছে। যা আমি পরবর্তীতে তার সমাধান দিতে পারি।

তারেক মনোয়ারের কথা কি মধুর জবাব



................ সুন্দর ভাবে একটি টি ব্যানার তৈরী করার জন্য  নিয়মাবলী..............
প্রথমে একটা নতুন ফটোশপ ফাইল ক্রিয়েট করুন (Ctrl + N); ফাইলের width & heignt  যথাক্রমে 372px এবং 466px দিন
1
এখন একটি লেয়াল তৈরী করুন (Shift + Ctrl + N) এবং এর নাম দিন “Background”. Foreground Color দিন #1c1c1c. এবার Paint Bucket Tool টি সিলেক্ট করুন (G) এবং ক্যানবাসে একটা ক্লিক করুনদেখবেন ক্যানবাসটা কালো হয়ে গেছে
এবার Foreground Color কে # 27add3 তে পরিনত করুনRounded Rectangle Tool টি সিলেক্ট করুন এবং একে নিচের মত কাস্টমাইজ করুনতারপর ক্যানবাসে একটা ক্লিক করুন
2
এবার Layer > Layer Style > Inner Glow এ গিয়ে নিচের মত করে সেট করুন
3
এখন আমরা নিচের ফিচার বাটনগুলো তৈরী করবতবে এর সকল টেক্সটগুলোই আমরা পরবর্তীতে এক সাথে প্রয়োগ করব
প্রথমে ডার্ক বাটনটা তৈরী করবএর জন্য, প্রথমেই ফরগ্রাউন্ড কালারকে #0086ac করুনএখন, Rectangle Tool (U) সিলেক্ট করুন এবং নিচের মত একটি সেপ তৈরী করুন (এই লেয়ারের নাম দিন: Button-1)
4
এখন লেয়ার পেলেট থেকে “Button-1” লেয়ারে ডাবল ক্লিক করুন এবং নিচের লেয়ার স্টাইলগুলো প্রয়োগ করুন
5
এখন এর নিচের বাটন তৈরী করতে হবেএখন অবশ্য বেশী সময় লাগবে নাকারণ আমরা প্রথমটা থেকেই দ্বিতীয়টা তৈরী করতে পাড়বএর জন্য প্রথমটা অর্থাৎ “Button: 1” কে ডুপ্লিকেট করুন (Ctrl + J) এবং Move Tool (V) সিলেক্ট করে নতুন বাটনটিকে একটু নিচে প্লেস করুন
এখন নতুন বাটনটির লেয়ারকে সিলেক্ট করুনএবার, Layer > Layer Style > Inner Shadow তে যান এবং একে নিচের মত সেট করুন
6
এখন আমরা বাটনগুলোর টেক্সট বসাবএর জন্য Horizontal Type Tool (T) সিলেক্ট করুন এবং আপনার টেক্সটগুলো বসানযেহেতু ব্যানারটার ব্যাকগ্রাউন্ড হালকা নীল/সেয়ান সেজন্য আমার এর সাথে মিল রাখার জন্য টেক্সট কালার সাদা নিবএর জন্য ফরগ্রাউন্ড কালারকে আবার সাদা অর্থ্যাৎ #FFFFFF করুনএবার আপনার টেক্সটগুলো লিখেনআমি উদাহরণ স্বরুপ কিছু কথা লিখছি
7
১০এবার আমরা নিচে একটা সাদা সাইন-আপ বাটন তৈরী করবএর জন্য Rounded Rectangle Tool (U) সিলেক্ট করুন এবং একে নিচের মত সেট করে, ক্যানবাসে একটা ক্লিক করুন
8
১১তারপর নতুন এই লেয়ারটিতে ডাবল ক্লিক করে নিচের লেয়ার স্টাইলগুলো এপ্লাই করুন
9
১২এবার Horizontal Type Tool (T) সিলেক্ট করে বাটনটার একটা নাম দিন এবং এই টেক্সট লেয়ারে ডাবল ক্লিক করে নিচের লেয়ার স্টাইল প্রয়োগ করুন
10
এবার আমরা তৈরী করব ব্যানারটার উপরের অংশতবে এর আগে এর বর্তমান অবস্থাটা দেখে নেয়া যাক
11
১৩এখন একেবারে প্রথমে আমার যে সেপটি তৈরী করেছিলাম অর্থাৎ সব শেষেরটার আগের লেয়ারটা সিলেক্ট করুনEllipse Tool (U) সিলেক্ট করুন এবং নিচের বৃত্তের মত একটা ডিম্বাকৃতির বৃত্ত তৈরী করুন
12
১৪এবার Layer > Layer Style > Gradient Overlay এবং একে নিচের মত সেট করুন
13
১৫এখন লেয়ারটিতে Right-Click > Create Clipping Mask এ ক্লিক করুন
14
১৬এবার আমরা এই ব্যানারে আরো সুন্দর ভাব আনার জন্য আনবএর জন্য, একটা নিউ লেয়ার তৈরী করুন (Shift + Ctrl + N)এবং Ctrl + প্রথম সেট লেয়ালে ক্লিক করুনদেখবে একটা সিলেকশন তৈরী হয়েছেএখন নতুন লেয়ারটাতে ক্লিক করুন, Foreground Color #78f3ff করে, Brush Tool (B) সিলেক্ট করুনএবার ব্রাশ সাইজ 125px করে তারপর এর Hardness: 0% করুনএই মূহুর্তে, সিলেকশন এরিয়ার উপরের দিকে একই জায়গায় তিনটা ক্লিক করুনঅবশেষে Ctrl + D চেপে সিলেক্ট এরিয়াটাকে ডিসিলেক্ট করুন
15
১৬তারপর, আরো কিছু টেক্সট এড করতে হবেএর জন্য Horizontal Type Tool (T) সিলেক্ট করে “Basic” টাইপ করুনএর জন্য, ফরগ্রাউন্ড কলারকে অবশ্যই #00a2b6 করে রাখবেন
এবার, Layer > Layer Style > Inner Glow এবং একে নিচের মত করে সেট করুন
16
১৭এখন, Basic Text Layer কে ডুপ্লিকেট করুন (Ctrl + J) এবং একে Move Tool (V) এর সাহায্যে নিচে প্লেস করুনতারপর এর লেখাকে পরিবর্তন করুন “per month” এর মাধ্যমে, সেই সাথে ফন্ট সাইজও কিছু কমিয়ে নিন (23pt)এবার, Layer Style থেকে Inner Glow এর কালার #002632 করে দিন
17
১৮এখানে আমরা কিন্তু একটা টেক্সট মিস্ করে এসেছিতা হল প্রাইস প্রাইসটা এখন আমরা লিখবএর জন্য Horizontal Type Tool (T) এর সাহায্যে $20 লিখুন, $ টেক্সটাকে 20 থেকে আলাদা করে লিখুনঅর্থ্যাৎ দুইটা টেক্সট লেয়ারে লিখুন এবং 20 টেক্সট এর সাইজ একটু বড় রাখুন
18
১৯এখন, 20 টেক্সট লেয়ারে ডাবল ক্লিক করুন এবং নিচের লেয়ার স্টাইলগুলো এপ্লাই করুন
19
২০এবার, 20 টেক্সট লেয়ারে Right-Click করে Copy Layer Style এ ক্লিক করুনতারপর $ লেয়ারে Right-Click করে Paste Layer Style এ ক্লিক করুনএর ফলে আমাদের দুটি লেয়ারেই একই ইফেক্ট পড়বে
এবং সেই সাথে আমাদের প্রজেক্টেরও সমাপ্তি ঘটলনিচে খেয়াল করে দেখুনতো আপনার ফাইনাল রেজাল্টটাও কি আমারটার মত হয়েছে?
20
এবার জেনে নিন কিছু কথা যার মাধ্যমে আপনি আপনার স্কিল ‍বৃদ্ধি করবেন
আপনি প্রতিটা স্টেপ ভালভাবে বুঝে নিন
একটা ইফেক্ট প্রদানের পর আপনার মূল ইমেজের যে পরিবর্তন হয় তার দিকে লক্ষ্য রাখুন এবং ইফেক্টটার কাজ বুঝার চেষ্টা করুন
একটা টিউটোরিয়াল শেষ করে বসে থাকবেন নাবার বার চেষ্টা করুননিজে নিজে কিছু তৈরী করার চেষ্টা করুন
আরো এডভান্স টিউটোরিয়ালের জন্য বিভিন্ন ইংরেজী টিউটোরিয়াল পড়ুন